গত বছরের ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতর পাওয়ার হাউস এলাকায় কালভার্টের পাশের ঝোপ থেকে তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। কারা কী কারণে তনুকে খুন করেছে, সে সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পায়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। থানা-পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হাত ঘুরে হত্যা মামলাটি এখন তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জালাল উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘তনুর মা তাঁর মেয়ের হত্যাকারী বলে যাঁদের সন্দেহ করছেন, তাঁদের প্রত্যেককে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এখনো জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা এই কাজই আমরা করছি।’ হত্যায় কতজন অংশ নিয়েছে, তা জানা গেছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, সেটা বের করার জন্য আরও কিছু সময়ের প্রয়োজন।
তনুর মা আনোয়ারা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, কুমিল্লা সেনানিবাসের তৎকালীন সার্জেন্ট জাহিদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে সিআইডি তাঁদের জানিয়েছে। তিনি আরও বলেন, সার্জেন্ট জাহিদ ছাড়াও তাঁর স্ত্রী, সিপাহি জাহিদ ও সার্জেন্ট তাজুলকেও তিনি সন্দেহ করেন। ঘটনার দিন তাঁর মেয়ে তনু ছাত্র পড়ানোর জন্য জাহিদের বাসায় গিয়েছিলেন। খুন হওয়ার মাস তিনেক আগে জাহিদের বাসায় টিউশনি নিয়েছিলেন তনু। ওই বাসায় সিপাহি জাহিদ ও সার্জেন্ট তাজুলেরও যাতায়াত ছিল।
আনোয়ারা বেগমের ধারণা, তনুকে ওই বাসাতেই হত্যা করে পরে ঝোপের মধ্যে ফেলে যায় হত্যাকারীরা। সন্দেহভাজন এই চারজনের কেউই এখন আর কুমিল্লা সেনানিবাসে নেই।
এর আগে গত বছরের ১০ মে আনোয়ারা বেগম কুমিল্লায় প্রথমে সাংবাদিকদের, তারপর সিআইডির কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, সার্জেন্ট জাহিদ ও সিপাহি জাহিদ তনুকে ডেকে নিয়ে যান। এরপর আর তনু ফিরে আসেননি। ওই দুজন এ হত্যায় জড়িত বলে তিনি সন্দেহ করেন।
সিআইডির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, সিআইডির ডিএনএ ল্যাবে পরীক্ষা করে তনুর ব্যবহৃত কাপড় থেকে পৃথক তিন ব্যক্তির বীর্যের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এতে প্রমাণিত হয় যে মৃত্যুর আগে তনু ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এর উল্লেখ ছিল না।
No comments:
Post a Comment