গল্পটা রোমাঞ্চকর। একজন অনিয়মিত লেগ স্পিনার হিসেবে দলে ঢোকা খেলোয়াড়টি আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে ১ নম্বর ব্যাটসম্যান হয়েছেন। শুধু তা-ই না, অস্ট্রেলিয়ার মতো টেস্ট খেলুড়ে দলে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন ৩ নম্বরে। আরও বিস্ময়ের ব্যাপার মাত্র ২৫ বছর বয়সেই অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক হয়েছেন। রূপকথার মতো ক্যারিয়ারে অধিনায়কত্ব পাওয়াটা স্মিথের নিজের কাছেও বড় বিস্ময়। কীভাবে তিনি অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক হলেন! সেই গল্পটিই তিনি বলেছেন আত্মজীবনী ‘দ্য জার্নি’তে। অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, স্মিথ যে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কত্ব পেতে যাচ্ছেন, সেটি নাকি তিনি জানতে পেরেছিলেন অ্যাডিলেডের একটি টেস্টের চা বিরতির সময়!
অস্ট্রেলিয়ার সে সময়ের প্রধান নির্বাচক রডনি মার্শ আগেই অবশ্য স্মিথকে দলের দায়িত্ব দেওয়ার সুপারিশ করেছিলেন। তখন দলের অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক, সহ-অধিনায়ক ব্র্যাড হাডিন। মার্শ চেয়েছিলেন হাডিনের আগে স্মিথকেই অধিনায়ক করতে। ২০১৪ সালে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার প্রথম টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছিল অ্যাডিলেড ওভালে। ফর্মে থাকা অধিনায়ক ক্লার্ক ক্যারিয়ারের ২৭তম ফিফটি তুলে নিলেন। ৬০ রানে অপরাজিত থাকা অবস্থায় পেসার ইশান্ত শর্মাকে পুল করতে গিয়ে পিঠে চোট পান ক্লার্ক। সেদিন চা বিরতির সময় আরেক নির্বাচক ও সাবেক অধিনায়ক মার্ক টেলরকে ব্র্যাড হাডিন বলেন, স্মিথকে অধিনায়ক বানিয়ে দিতে।
স্মিথ তাঁর বইয়ে লিখেছেন, ‘হাসতে হাসতে মার্ক ব্র্যাডকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “তুমি এটা (অধিনায়কত্ব) করতে চাও না?” তিনি ভেবেছিলেন ব্র্যাড বুঝি মজা করছেন।
“তুমি সিরিয়াস?” এরপর মার্ক আমার দিকে ফিরে জিজ্ঞাসা করলেন “তুমি কি তৈরি?”
আমার মধ্যে কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাজ করেনি। আমি মাথা ঝাঁকিয়ে বলেছিলাম “আমি তৈরি।” মার্ক বললেন, “আমি তবে যাই, আমাকে কয়েকটি ফোন করতে হবে।”’
পরদিন সকালে মার্শ স্মিথকে ডেকে জানিয়ে দেন তিনিই হতে যাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার ৪৫তম টেস্ট অধিনায়ক। পরের সপ্তাহে মার্ক টেলরের হাত থেকে অধিনায়কের ব্লেজার বুঝে নেন স্মিথ। ব্রিসবেন টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে দারুণ এক জয়ও এনে দেন তিনি। দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম তিনটি টেস্টেই সেঞ্চুরি করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে ‘দ্বিতীয় কনিষ্ঠতম’ এই টেস্ট অধিনায়ক।
আত্মজীবনীতে ২০১৯ সালে অ্যাশেজ ও ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতার লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন তিনি। দুটিই হচ্ছে ইংল্যান্ডের মাটিতে। ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপাটাও খুব করেই জিততে চান। ২০ ওভারের বিশ্বকাপের সেই আসরের আয়োজক যে স্মিথরাই। সূত্র: এনডিটিভি।
No comments:
Post a Comment