Saturday, December 23, 2017

১৭২৮০ বর্গফুটের লাল–সবুজ পতাকা





বিজয় দিবস। তাই একটি বড় পতাকা বানাবেন তাঁরা। দুজনের আড্ডায় এই চিন্তা আসার সঙ্গে সঙ্গে মাথায় চাপল দুশ্চিন্তাও। বড় তো, কিন্তু কত বড়? তা ভাবতে ভাবতেই সেদিন ঘরে ফিরেছিলেন সুমন বণিক ও মেহেদী হাসান। তবে সমাধান মিলল রাতেই—মাঠ যত বড়, পতাকাও হবে তত বড়।

দুজন সকালেই চলে গেলেন বিজরা রহমানিয়া চির সবুজ উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে। মাপ নিলেন। ততক্ষণে দুজনের সঙ্গে তাল মিলিয়েছেন তাঁদের আরেক বন্ধু জহির উদ্দিন। এরপরই এগোতে থাকে কাজ। বিজয় দিবসে পূরণ হলো তাঁদের বড় পতাকা বানানোর স্বপ্ন। সে পতাকার আকার হয়েছিল ১৭ হাজার ২৮০ বর্গফুট। যা দৈর্ঘে–প্রস্থে দাঁড়ায়—১৮০ ফুট ও ৯৬ ফুট।

১৮ ডিসেম্বর সকালে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বিজরা রহমানিয়া চিরসবুজ উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের শহীদ মিনারের বেদিতে বসেই কথা হচ্ছিল তিন তরুণের সঙ্গে। জহির উদ্দিন বলেন, ‘ব্যতিক্রমী কিছু করে আমাদের গ্রামকে পরিচয় করানোর চিন্তা থেকেই এটা হয়েছে।’

পরিকল্পনা যখন পাকা, তখনই তাঁরা গড়ে তুললেন বিজরা ঐক্য মঞ্চ। নিজেদের ইচ্ছার কথা জানালেন গ্রামের মানুষদের। বিষয়টি সবাই নিলেন ইতিবাচকভাবে। সুমন বণিক বলছিলেন, ‘আমরা ভরসা পেলাম। তত দিনে বিদ্যালয়ে মাঠের আয়তন বিবেচনা করে পতাকার মাপ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই কাজটি করেছেন ছোট লক্ষ্মীপুর গ্রামের জহিরুল ইসলাম।’

পতাকার মাপ ঠিক হলো। কিন্তু খরচ। সেটাও তাঁরা জেনে নিয়েছেন দরজির কাছ থেকে। খরচ হবে প্রায় ৯০ হাজার টাকা। এলাকাবাসী এগিয়ে এলেন আর্থিক সহযোগিতায়। ৩০ হাজার টাকা জমা হলো। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় সেটা নেহাত কম। তিন বন্ধু তখন মরিয়া। যে করেই হোক বানাতে হবে। সিদ্ধান্ত নিলেন, তিনজনে দেবেন বাকি টাকা। জহিরুল বললেন, ‘আমরা তিনজনেই এলাকায় ব্যবসা করি। নিজেদের ইচ্ছে পূরণ করতে টাকাটা বাধা হয়নি।’

No comments:

Post a Comment

Wikipedia

Search results

Popular Posts