Saturday, December 23, 2017

কাজ শেষ হওয়ার পরের দিনই কালভার্টে ভাঙন





নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার এক দিন পার না হতেই মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় নির্মিত একটি কালভার্টের একাংশ ভেঙে পড়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন অংশ ফাটল দেখা দিয়েছে। সদর ইউনিয়নের জায়ফরনগর ইউনিয়নের পূর্ব বেলাগাঁও গ্রামে ওই কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, অত্যন্ত নিম্নমানের কাজের কারণে কাজ শেষ হওয়ার এক দিন পরই কালভার্টটি ভেঙে গিয়েছে।

জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয় সূত্রে এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার সহায়তা প্রকল্পের (এলজিএসপি) আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে কণ্ঠিনালা সেতু-রাবার বাঁধ সড়কে পূর্ব বেলাগাঁও গ্রামে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৫ ফুট দীর্ঘ ও ৬ ফুট চওড়া একটি কালভার্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রকল্প কমিটির সভাপতি হন ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ফজলুর রহমান ওরফে বজলু মেম্বার।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কালভার্টটির নকশা ও প্রাক্কলন ব্যয় নির্ধারণ করে দেয়। নকশায় সাত ফুট উচ্চতার ওই কালভার্টের নিচে রড ও কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে দুই পাশে তিনটি স্তরে ২০, ১৫ ও ১০ ইঞ্চি চওড়া করে ইটের দেয়াল নির্মাণ করার কথা উল্লেখ রয়েছে।

১৫ ডিসেম্বর কালভার্টটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। শেষ হয় ২১ ডিসেম্বর। গতকাল শুক্রবার রাতে কালভার্টটির এক পাশের প্রতিরক্ষা দেয়াল ভেঙে পড়ে যায়।

আজ সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, ইটের দুটি দেয়ালের ওপর পাকা ঢালাই দিয়ে কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়েছে। পূর্ব পাশে প্রতিরক্ষা দেয়াল ভেঙে মাটিতে পড়ে আছে। কালভার্টের দুই পাশে মাত্র ১০ ইঞ্চি চওড়া করে দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে এক পাশের দেয়ালে প্রায় তিন ফুট দীর্ঘ ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে।

গ্রামের বাসিন্দা আফতাব আলী, মনিরুল ইসলাম ও আবুল কাশেম বলেন, এ রাস্তা দিয়ে এলাকার সহস্রাধিক লোক উপজেলা সদরে চলাচল করে। এ ছাড়া রবি শস্য ও বোরো ধানের মৌসুমে হাকালুকি হাওর থেকে বিভিন্ন এলাকার লোকজন এ রাস্তা দিয়ে ফসল নিয়ে যায়। ওই তিনজনের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ হওয়ার কারণে ভেঙে যাওয়ার পাশাপাশি কালভার্টটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। তাঁরা নতুন করে কালভার্টটি নির্মাণ করে দেওয়ার দাবি জানান।

কালভার্টটি নির্মাণকাজের সঙ্গে জড়িত মিস্ত্রি বলাই মিয়া দাবি করেন, শুক্রবার সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য স্থানীয় উদ্যোগে কালভার্টের পাশ থেকে খননযন্ত্র দিয়ে কিছু মাটি কেটে দুই পাশে ফেলা হয়। আর এ কারণে মাটির চাপে কালভার্টে ভাঙন ও ফাটল দেখা দেয়। নকশা অনুযায়ী দেয়াল নির্মাণ না করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউপি সদস্য যেভাবে বলেছেন, সেভাবেই তিনি কাজ করেছেন।

ইউপি সদস্য ফজলুর রহমান বলেন, কালভার্টটি মেরামত করে দেওয়া হবে। নকশার বাইরে কোনো কাজ হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।

এলজিইডির উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী ওহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, কালভার্টটির নির্মাণকাজ তাঁর তদারক করার কথা ছিল। কিন্তু এর নির্মাণকাজ শুরু বা শেষ হওয়ার বিষয়ে ইউপি সদস্য তাঁকে কিছুই জানাননি।

জায়ফরনগর ইউপির চেয়ারম্যান মাছুম রেজা বলেন, তিনি কালভার্টে ভাঙন ও ফাটলের বিষয়টি শুনেছেন। কাজে ত্রুটি থাকলে বরাদ্দের টাকা ছাড় দেওয়া হবে না।

No comments:

Post a Comment

Wikipedia

Search results

Popular Posts