Wednesday, December 27, 2017

দেখতে হলে ফিটফাট, চলে আসুন সদরঘাট: শাজাহান খান




একসময় দেশের মানুষ বলত, “ওপরে ফিটফাট, মধ্যে সদরঘাট।” এখন বলব, “দেখতে হলে ফিটফাট, চলে আসুন সদরঘাট।”’ স্থানীয় উন্নয়ন প্রসঙ্গে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এ কথা বলেন। বুধবার সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা থেকে সুন্দরবন পর্যন্ত গ্রিন লাইন ওয়াটার ওয়েজের নৌপরিবহন কার্যক্রমের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।

ওই অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রী বলেন, দেশের অন্যতম সমুদ্রসৈকত হচ্ছে কুয়াকাটা। কুয়াকাটাকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। সে পরিকল্পনার আওতায় কুয়াকাটায় কক্সবাজারের মতো মেরিন ড্রাইভ সড়ক তৈরি করা হবে। পর্যটকদের বিনোদনের জন্য বিশাল একটি অ্যাকুরিয়াম, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, গলফ গ্রাউন্ড, সিনেপ্লেক্স, লাইট হাউস নির্মাণ করা হবে। এমনকি কুয়াকাটায় বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হবে। দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য এসব স্থাপনা নির্মিত হবে।
দেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে নৌপথ ও নৌ বন্দরের উন্নয়নসহ আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। তাঁর জন্যই পায়রা বন্দর হচ্ছে। এ জন্যই এ অঞ্চলের আমূল পরিবর্তন হবে। পায়রা বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের মতোই উন্নত হবে। এ বন্দরকে কেন্দ্র করেই এখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠবে।
নৌপরিবহনমন্ত্রী আরও বলেন, সুন্দরবন দেখার জন্য একমাত্র পথ ছিল খুলনা, যা ছিল সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল। কুয়াকাটা থেকে চালু হওয়া এ সেবার মাধ্যমে পর্যটকেরা সরাসরি সুন্দরবনসহ পার্শ্ববর্তী দর্শনীয় স্থানগুলো দেখতে পারবেন। এতে পর্যটকদের সময় ও অর্থ—দুটিই সাশ্রয় হবে। পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটাকে ঘিরে নৌপথের উন্নয়ন করা হবে। বিশেষ করে আন্ধারমানিক নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য খনন কার্যক্রম শুরু করা হবে।
কুয়াকাটা-সংলগ্ন আলীপুর মৎস্য বন্দরে পর্যটকদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য একটি পন্টুন স্থাপন করার প্রতিশ্রুতি দেন মন্ত্রী।
ওই অনুষ্ঠানে নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে নৌমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবারও সরকার গঠন করবে। শেখ হাসিনা ছাড়া যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে সারা দেশে যে উন্নয়ন হচ্ছে তা ব্যাহত হবে।
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আবদুল বারেক মোল্লার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো. মাছুমুর রহমান, পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান, কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব তালুকদার, কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর রহমান, কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার, গ্রিন লাইন ওয়াটার ওয়েজের মালিক মো. আলাউদ্দিন প্রমুখ।

গ্রিন লাইন ওয়াটার ওয়েজ উদ্বোধন
নৌপরিবহনমন্ত্রী ফিতা কেটে গ্রিন লাইন ওয়াটার ওয়েজের নৌযানের যাত্রীসেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাতটায় কুয়াকাটা থেকে সুন্দরবনে পর্যটকদের নিয়ে যাত্রী পরিবহন শুরু হবে। কুয়াকাটা থেকে সুন্দরবনে যেতে তিন ঘণ্টা সময় লাগবে। আধুনিক সুযোগ-সুবিধার নৌযানটিতে তিন শ্রেণির আসন রয়েছে। এর মধ্যে ১১২টি সোফা, সাধারণ চেয়ার ২০০টি, ৪টি সিঙ্গেল কেবিন এবং ১৫টি ডাবল কেবিন রয়েছে। এতে সোফা বা চেয়ারের জন্য যাত্রীপ্রতি ভাড়া দুই হাজার টাকা, সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া তিন হাজার টাকা এবং ডাবল কেবিনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় হাজার টাকা। এ ভাড়ার মধ্যেই যাত্রীদের জন্য সকালের নাশতা, দুপুরের খাবার এবং বিকেলের জন্য নাশতার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ঢাকা থেকে তিন দিনের আলাদা একটি প্যাকেজও চালু করেছে গ্রিন লাইন। সে ক্ষেত্রে ঢাকা থেকে বরিশাল পর্যন্ত গ্রিন লাইন ওয়াটার ওয়েজে করে যাত্রী পরিবহন করা হবে। এরপর বরিশাল থেকে গ্রিন লাইনের নিজস্ব এসি বাসে করে যাত্রীকে কুয়াকাটায় নিয়ে আসা হবে। কুয়াকাটায় এসে যাত্রীদের নিজেদের ব্যবস্থাপনায় থাকতে হবে। পরের দিন যাত্রীদের কুয়াকাটা থেকে সুন্দরবন বেড়ানোর জন্য নেওয়া হবে। সেখান থেকে একইভাবে ঢাকায় পৌঁছে দেওয়া হবে। এ প্যাকেজে সোফা বা চেয়ারের ভাড়া প্রতিজন ৫ হাজার ৫০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া ৬ হাজার ৫০০ টাকা এবং ডাবল কেবিনের ভাড়া ৯ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

No comments:

Post a Comment

Wikipedia

Search results

Popular Posts